কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি প্রশ্নোত্তর - নবম শ্রেণী

কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি – প্রশ্নোত্তর 

নবম শ্রেণি – বাংলা – কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি 



🔰 অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :
কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি প্রশ্নোত্তর - নবম শ্রেণী

1 “হুড় হুড় দুড় দুড় বহে ঘন ঝড়।”——উক্তিটির তাৎপর্য কী? 
উত্তর:, মেঘের প্রবল গর্জন এবং মুষলধারে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে যে প্রবল ঝড় বইছিল তার ভয়ানক রূপ প্রকাশ পাচ্ছে।

2 “বিপাকে ভবন ছাড়ি প্রজা দিল রড়।।”—কোন্ বিপাকে
প্রজা পালাল ?
উত্তর: মুষলধারায় বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ভয়ংকর ঝড়ের তাণ্ডবে আসন্ন বিপদের কথা ভেবে প্রজারা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালান।

3. “... প্রজা চমকিত।”—প্রজা চমকিত হল কেন ? উত্তর: বিধ্বংসী ঝড়বৃষ্টির তাণ্ডবে কলিঙ্গদেশে সমগ্র প্রকৃতি ধুলোয় ঢেকে যায় এবং শস্যখেতের ফসল নষ্ট হওয়ায় প্রজা চমকিত হয়।

4. চারদিকে মেঘে জল দেয় কারা ?
উত্তর: কলিঙ্গদেশে প্রবল ঝড়বৃষ্টির সময় চারদিকে মেঘে জল দিয়েছিল ‘অষ্ট গজরাজ' বা আটটি হাতিশ্রেষ্ঠ।

5. জলধারার বর্ষণকে কীসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
উত্তরঃ জলধারার প্রবল বর্ষণকে করি-কর অর্থাৎ হাতির শুঁড় দ্বারা জল বর্ষণের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

6. “পথ হইল হারা।।”—পথ কীভাবে হারাল ?
উত্তর:প্রবল বৃষ্টিপাতে কলিঙ্গে প্লাবন সৃষ্টি হয়েছিল। এর ফলে স্থলভূমি জলমগ্ন হয়ে পড়ায় পথ হারিয়ে যায় । 

7. “কারো কথা শুনিতে না পায় কোনো জন।।”—কারো কথা কেউ শুনতে না পাওয়ার কারণ কী?
উত্তরঃ প্রবল বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বারংবার মেঘের প্রবল গর্জনে কলিঙ্গবাসী কেউ কারো কথা শুনতে পাচ্ছিল না।

8. কলিঙ্গবাসী কার কথা স্মরণ করেছেন ?
উত্তরঃ ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কলিঙ্গবাসী বজ্রনিবারক জৈমিনি ঋষির কথা স্মরণ করেছেন।

9. “না পায় দেখিতে কেহ রবির কিরণ।।”——রবির কিরণ দেখতে না পাওয়ার কারণ কী?
উত্তরঃ ভয়ংকর কালো মেঘে চারদিক ঢেকে গিয়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কেউ সূর্যরশ্মি দেখতে পাচ্ছিল না।

10. গর্ত ছেড়ে কারা জলে ভেসে বেড়াচ্ছে ?
উত্তরঃ প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কলিঙ্গদেশ জলমগ্ন হওয়ায় গর্ত ছেড়ে সাপ জলে ভেসে বেড়াচ্ছে।

11. কলিঙ্গদেশে কতদিন টানা বৃষ্টিপাত হয়েছিল ?
উত্তর: কলিঙ্গদেশে টানা সাত দিন প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছিল।

12. সাত দিন বৃষ্টিতে কৃষিকাজ ও ঘরবাড়ির কী ক্ষতি হল?
উত্তর: সাত দিনের বৃষ্টিতে শস্যখেত জলে নিমজ্জিত হওয়ায় ফসল নষ্ট হয়ে গেল এবং প্রবল শিলাবৃষ্টিতে বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেল ।

13. কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কাব্যাংশে শিল পড়াকে কীসের
সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
উত্তর: ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কাব্যাংশে বড়ো আকারের শিল পড়াকে ভাদ্র মাসে তাল পড়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

14. চণ্ডীর আদেশে বীর হনুমান কী করেছেন?
উত্তর: দেবী চণ্ডীর আদেশে বীর হনুমান কলিঙ্গদেশের সমস্ত মঠ, অট্টালিকা ধ্বংস করেছেন।

15. কলিঙ্গদেশের মঠ ও অট্টালিকা ভাঙার জন্য চণ্ডী কাকে আদেশ দিয়েছিলেন ?
উত্তর: কলিঙ্গদেশের মঠ ও অট্টালিকা ভাঙার জন্য দেবী চণ্ডী বীর হনুমানকে আদেশ দিয়েছিলেন।

16. “উঠে পড়ে ঘরগুলা করে দলমল।।”–এর কারণ কী? উত্তরঃ। পর্বততুল্য নদীর ঢেউ-এর দাপটে কলিঙ্গদেশের বাড়িঘর জলে ভাসতে ভাসতে টলমল করছিল।

17."...ধায় নদনদীগণ।”—কার আদেশে নদনদী ধেয়ে এল?
উত্তরঃ দেবী চণ্ডীর আদেশে কলিঙ্গদেশের সমস্ত নদনদীর জলধারা নগরে প্রবেশ করে।

18. “অম্বিকামঙ্গল গান শ্রীকবিকঙ্কণ।।”—শ্রীকবিকঙ্কণ কার উপাধি?
উত্তর শ্রীকবিকঙ্কণ মধ্যযুগের চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের সর্বশ্রেষ্ঠ
কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর উপাধি ৷

19. শ্রীকবিকঙ্কণ কী গান গেয়েছেন?
উত্তর:) শ্রীকবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তী অম্বিকামঙ্গল গান
গেয়েছেন।

20. 'অম্বিকামঙ্গল' মঙ্গলকাব্য ধারার কোন্ কাব্যের নাম ?
উত্তর। কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তী রচিত 'অম্বিকামঙ্গল’
চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের নাম ৷

21. মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর 'কবিকঙ্কণ' উপাধির কারণ কী?
উত্তর: মঙ্গলকাব্যের পেশাদার গায়ক হিসেবে
চক্রবর্তী হাতে ও পায়ে ঘুঙুর পরে গান কবিকঙ্কণ তাঁর উপাধি ।

🔰 সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর :


1. “দেখিতে না পায় কেহ অঙ্গ আপনার।।”—কারোর অঙ্গ দেখতে না পাওয়ার কারণ কী?

উত্তর:। হঠাৎই কলিঙ্গদেশে ভয়াল প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দেয়। আকাশ ঘন কালো মেঘে ছেয়ে যায়। কালো মেঘের বুক চিরে ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। চতুর্দিকে কালো মেঘের সমাবেশের ফলে সমগ্র কলিঙ্গদেশ অন্ধকারে ঢেকে যায়। অন্ধকার এতটাই গাঢ় হয়ে ওঠে যে, তা ভেদ করে প্রজারা নিজেদের চেহারা পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছিলেন না।


2 “ঈশানে উড়িল মেঘ সঘনে চিকুর।”—উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

উত্তর:। কলিঙ্গদেশে প্রবল ঝড়বৃষ্টি সর্বনাশ ডেকে আনে। উদ্ধৃতাংশটিতে সেই ভয়াল বিপর্যয়ের বর্ণনা করা হয়েছে। কলিঙ্গদেশে আকাশের উত্তর-পূর্ব অর্থাৎ ঈশান কোণে মেঘের ঘনঘটায় চারদিক অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। সেই মেঘের বুক চিরে নিরন্তর বিদ্যুতের ঝিলিক পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে।


3. “নিমিষেকে জোড়ে মেঘ গগন-মণ্ডল।”— গগনমণ্ডলে মেঘ জুড়ে কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হল ?

উত্তর:। “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কাব্যাংশ থেকে গৃহীত পঙ্ক্তিটিতে কলিঙ্গদেশে ভয়াবহ ঝড়বৃষ্টির বর্ণনা করা হয়েছে। ‘নিমিষেকে’ অর্থাৎ-অতি অল্পকালে বা মুহূর্তের মধ্যে কলিঙ্গের আকাশ ঘন কালো মেঘে ছেয়ে যায়। ঈশান কোণে ঘন অন্ধকারের মধ্যে বিদ্যুতের ঝলকে আকাশ কেঁপে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যে সারা আকাশ জুড়ে কালো মেঘের সমাবেশে চারদিক অন্ধকারে ঢাকা পড়ে।


4 “চারি মেঘে বরিষে মুষলধারে জল।।”— মুষলধারে জল বর্ষণের কারণ কী?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কাব্যাংশের উদ্ধৃতাংশটিতে কলিঙ্গদেশের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বর্ণনা করা হয়েছে। কলিঙ্গদেশের আকাশ সহসা ঘন, কালো মেঘে ছেয়ে যায়। গাঢ় অন্ধকারে নিজেদের চেহারা পর্যন্ত দেখতে সক্ষম হন না কলিঙ্গবাসী। ঈশান কোণে ঘন মেঘের সমাবেশে চারদিক অন্ধকারে ঢাকা পড়ে। প্রবল মেঘের গর্জন, ঘনঘন বিদ্যুতের কে পৃথিবী কেঁপে ওঠে। দূরদিগন্তে মেঘের গম্ভীর
যায়। মুহূর্তের মধ্যে সারা আকাশ ঢেকে যায় 
কালো মেঘের আচ্ছাদনে। তারপরই আকাশভাঙা মেঘে প্রবল বর্ষণ শুরু হয় কলিঙ্গদেশে।


5 “কলিঙ্গে উড়িয়া মেঘ ডাকে উচ্চনাদ।”—কলিঙ্গের অবস্থান উল্লেখ করে উদ্ধৃতাংশটির ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: বর্তমান ওডিশার বেশির ভাগ অংশ, অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তর ভাগ এবং মধ্যপ্রদেশের কিছুটা অংশ জুড়ে ছিল প্রাচীন এই কলিঙ্গ প্রদেশ।

কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তী রচিত 'কলিঙ্গদেশে ঝড়- বৃষ্টি' কাব্যাংশে কলিঙ্গদেশে ভয়াবহ প্লাবনের বর্ণনা করা হয়েছে। কলিঙ্গের আকাশ সহসা ঘন কালো মেঘে ছেয়ে যায়। ঈশান কোণে মেঘের আড়ম্বরে ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। দূরদিগন্তে মেঘের গম্ভীর ধ্বনির সঙ্গে সঙ্গেই কালো মেঘরাশিতে আকাশ ঢেকে যায়। মেঘের প্রবল গর্জনের সঙ্গে শুরু হয় মুষলধারায় বৃষ্টি। সমগ্র কলিঙ্গ মেঘের গুরুগম্ভীর শব্দে কেঁপে ওঠে।


6. “প্রলয় গণিয়া প্রজা ভাবয়ে বিষাদ। ” - এখানে প্রজাদের বিষাদের কারণ কী?

উত্তর:) “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কাব্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটিতে কলিঙ্গদেশের প্রজাদের কথা বলা হয়েছে।
কলিঙ্গদেশের আকাশে সহসা বিপুল মেঘরাশির সমাবেশ ঘটে। ঈশান কোণে জমাট বাঁধা মেঘ সারা আকাশ ঢেকে ফেললে সমগ্র কলিঙ্গে অন্ধকার নেমে আসে। উত্তরের প্রবল বাতাসে দূরপ্রান্ত থেকে মেঘের গম্ভীর আওয়াজ ভেসে আসে। মেঘের প্রবল গর্জন ও ঘনঘন বিদ্যুৎ চমকের সঙ্গে শুরু হয় প্রবল বর্ষণ। মহাপ্লাবনের আশঙ্কায় প্রজারা বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে।


7. “বিপাকে ভবন ছাড়ি প্রজা দিল রড়।।”-প্রজাদের বিপাকের কারণ কী?

উত্তরঃ কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কাব্যাংশ থেকে নেওয়া উদ্ধৃতাংশে কলিঙ্গদেশের বিপন্ন প্রজাদের কথা বোঝানো হয়েছে। কলিঙ্গদেশে প্রবল ঝড়বৃষ্টি বিপর্যয় ডেকে আনে। কলিঙ্গদেশে প্রবল বর্ষণের সঙ্গে মেঘের গম্ভীর গর্জন ও ঝড়ের তাণ্ডবে সেখানকার প্রজারা সমূহ বিপদের আশঙ্কায় ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।


8 “জলে মহী একাকার পথ হইল হারা।।”—কোথাকার
পথ কেন হারিয়ে গিয়েছে?

উত্তর: “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কাব্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে। কলিঙ্গদেশের পথ হারিয়ে যাওয়ার কথা
বলা হয়েছে।

কলিঙ্গের আকাশে সহসা ঘন কালো মেঘরাশির সমাবেশ ঘটে। মেঘের আড়ম্বরের সঙ্গে ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। মেঘের প্রবল গর্জনের সঙ্গে শুরু হয় মুষলধারায় বৃষ্টি। মনে হয়, আট দিক থেকে আটটি দিক্-হস্তী তাদের শুঁড়ের সাহয্যে প্রবল বেগে জল বর্ষণ করে পৃথিবীকে যেন ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চায়। প্রবল বৃষ্টিতে সমগ্র কলিঙ্গদেশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জল-স্থলের বিভেদ মুছে গিয়ে পথ হারিয়ে যায় কলিঙ্গদেশে।


9. “কলিঙ্গে সোঙরে সকল লোক যে জৈমিনি।।”-কলিঙ্গবাসীর জৈমিনিকে স্মরণের কারণ কী?

উত্তরঃ) কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কাব্যাংশে উল্লিখিত জৈমিনি হলেন এক বাক্‌সিদ্ধ ঋষি। এনার নাম স্মরণ করলে বজ্রপাত বন্ধ হয় এই বিশ্বাসে বজ্রপাতের সময় মানুষ এঁর নামকীর্তন করে।

কলিঙ্গদেশের আকাশে হঠাৎ ঘন কালো মেঘের সমাবেশ ঘটে। আকাশভাঙা মেঘে বৃষ্টি নামে মুষলধারায়। মেঘের গম্ভীর গর্জন, ঘনঘন বজ্রপাত, ঝড়ের প্রবল তাণ্ডবে ভীত কলিঙ্গবাসী এই ভীষণ বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার আশায় জৈমিনি ঋষিকে স্মরণ করতে থাকে।


10. “না পায় দেখিতে কেহ রবির কিরণ।।”—“কারা, কেন রবির কিরণ দেখতে পায়নি ?

উত্তর:) ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কাব্যাংশ থেকে নেওয়া উদ্ধৃতাংশটিতে ঝড়বৃষ্টি কবলিত কলিঙ্গবাসীর কথা বলা হয়েছে।

কলিঙ্গদেশের আকাশে হঠাৎই বিপুল মেঘরাশির সমাবেশ ঘটে। মেঘের ঘনঘটার মাঝে বিদ্যুতের ঝলকে সমগ্র কলিঙ্গদেশ কেঁপে ওঠে। দূরদিগন্তে মেঘের গম্ভীর ধ্বনির সঙ্গে উত্তর শুরু হয় মুষলধারায় বৃষ্টি। কালো মেঘের সমাবেশে চারদিক অন্ধকারাচ্ছন্ন হওয়ার ফলে দিনরাত্রির পার্থক্যও বোঝা সম্ভব হয় না কলিঙ্গবাসীর। সাত দিন একটানা প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে তারা সূর্যের আলো দেখতে পায় না।


11. “আছুক শস্যের কার্য হেজ্যা গেল ঘর।।”—প্রসঙ্গ উল্লেখ করে উদ্ধৃতাংশটির ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর 'কলিঙ্গদেশে ঝড়- বৃষ্টি' কাব্যাংশে কলিঙ্গদেশে প্রবল ঝড়বৃষ্টির তাণ্ডবে যে 
ভয়ংকর প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তার উল্লেখ প্রসঙ্গেই মন্তব্যটি করা হয়েছে।

কলিঙ্গের প্রলয় তাণ্ডব চলেছিল সাতদিন ধরে। এই গৃহীত কদিন ধরে প্রবল বর্ষণ, মেঘের গম্ভীর গর্জন ও ঝড়ের তাণ্ডব চলতে থাকে। ফলে প্লাবিত হয় সমস্ত দেশ, নষ্ট হয় খেতের ফসল, বন্ধ হয়ে যায় চাষের কাজ। তাই কবি বলেছেন 'আছুক শস্যের কার্য”। আবার, এই প্রবল বর্ষণের ফলে মাটির ঘরগুলি জলে ভিজে একসা হল, ভিজে মাটির ঘরগুলি ক্রমাগত জল ষ্টি। শোষণ করার ফলে কমজোরি হয়ে পড়ছে। যে-কোনো মুহুর্তেই ভেঙে পড়তে পারে-এমন অবস্থা

12 “ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল।।”— কোন্ প্রসঙ্গে এরূপ বলা হয়েছে?

উত্তর: কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তী রচিত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কাব্যাংশে কলিঙ্গদেশে যে ভয়াবহ ঝড়বৃষ্টি হয়েছিল তার বর্ণনা করা হয়েছে। আকাশ কালো-করা বিপুল মেঘরাশির বর্ষণে প্লাবন সৃষ্টি হয় কলিঙ্গে। টানা সাত দিনের অবিরাম নি বর্ষণের সঙ্গে নিরন্তর শিল পড়তে শুরু করে। ভাদ্র মাসে তাল পেকে যেমন গাছ থেকে পড়ে যায় ঠিক তেমনিভাবে অত্যন্ত বড়ো আকারের শিল ঘরের চাল ভেদ করে মেঝেতে পড়ে প্রজাদের ঘরবাড়ি বিনষ্ট করে দেয়।


13. চণ্ডীর আদেশে কারা কীভাবে কলিঙ্গের ধ্বংস ঘটিয়েছেন ?

উত্তরঃ) ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' শীর্ষক কাব্যাংশের শেষ কয়েক ছত্রে মা চণ্ডীর আদেশের উল্লেখ করা হয়েছে। মা চণ্ডীর আদেশে বীর হনুমান কলিঙ্গদেশের সমস্ত দেবালয় এবং বাসগৃহ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। মা চণ্ডীরই আদেশে কলিঙ্গের সমস্ত নদনদীগুলি ফুলে ফেঁপে উত্তাল হয়ে ওঠে এবং তাদের প্রবল ঢেউ-এর ধাক্কায় সব বাড়িঘর ভেসে যায়। মনে হয় বাড়িঘরগুলি যেন ঢেউ-এর মাথায় উঠে টলমল করে ভাসছে।


14. “চণ্ডীর আদেশে ধায় নদনদীগণ।”—এর ফলে কী হয়েছে?

উত্তর: ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কাব্যাংশে দেবী চণ্ডীর আদেশে কলিঙ্গের নদনদীগুলি ফুলে ফেঁপে উঠে প্রবাহিত
হয়েছে।

দেবীর আদেশেই কলিঙ্গে কালো মেঘরাশির সমাবেশের সঙ্গে বিদ্যুতের ঝলকানি ডেকে আনে প্রবল বর্ষণ। সাত দিনের অবিরাম বর্ষণে প্লাবিত হয় সমগ্র কলিঙ্গদেশ, একাকার হয়ে যায় জল-স্থল। দেবীর নির্দেশেই আবার কলিঙ্গের সমস্ত নদনদী ফুলে ফেঁপে ধেয়ে আসে। নদনদীর পর্বততুল্য ঢেউ-এর আঘাতে কলিঙ্গদেশের ঘরবাড়ি ভেসে গিয়ে ঢেউয়ের মাথায় টলমল করতে থাকে।

You can also read : 

Post a Comment

Previous Post Next Post